মুশফিক স্যার বয়ান (০১)
দুনিয়াতে দুটি পথ। এক হলো আল্লাহর দেয়া আম্বিয়া আঃ দের মাধ্যম্যে দ্বীনের
পথ, আর এর মোকাবেলায় মানুষ নিজে আবিষ্কার করেছে নিজের সন্তুষ্টির পথ। আমি
আমাকেই সন্তুষ্ট করতে চাই, আল্লাহর সন্তুষ্টির দরকার নাই। সে নিজেকে
আল্লাহর প্রতিদ্বন্দি বানিয়েছে। নিজেই নিজের উপাস্য। কোরআনে পাকের অর্থঃ
তুমি কি তাকে দেখেছ যে নিজের ইচ্ছাকে নিজের উপাস্য বানিয়েছে। সে নিজেই
ইলাহ। আল্লাহতায়ালা আম্বিয়াকেরামকে পাঠিয়েছেন এইসব ইলাহা
কে বাদ দিয়ে এক আল্লাহকে ইলাহ হিসাবে গ্রহন কর। যার সন্তুষ্টি সে চায়, লা
ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আর যে দুনিয়ার পথে চলছে তার লক্ষ্য আমার সন্তুষ্টি।
যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়ার কথা ছিল সেখানে সে নিজের সন্তুষ্টি
চাচ্ছে, সে আল্লাহর জায়গায় নিজেকে বসিয়েছে। মনের চাওয়াতে যে পথ আবিষ্কার
করেছে বা করেই যাচ্ছে ঐটাকে সভ্যতা বলা হয়। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন সভ্যতার
উত্থান হয়েছে, পতন হয়েছে, ছিল, আছে। কোনটা আছে কোনটা নাই। কোনটা মানুষ জানে
কোনটা মানুষ জানেনা। এই সব সভ্যতা গুলো এক জায়গায় এসে মিলে যায়, যে সব
সভ্যতার বুনিয়াদ হচ্ছে নিজের সন্তুষ্টি। যারা এই সভ্যতাগুলো গড়ে তুলেছে
তারা তাদের নিজেদের ভালো জীবনের জন্য গড়ে তুলেছে। এর মোকাকেলায়
আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন জামানায় নবীদেরকে পাঠিয়েছেন আদম আঃ হতে রসুল সাঃ
পর্যন্ত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অঞ্চলে নবীরা এসেছেন, একেক নবী একেক শরিয়াত
নিয়ে এসেছেন। সব নবীদের দাওয়াতের কথা এক জায়গায় এসে মিলে যায় আল্লাহর
সন্তষ্টির জীবন গড়। সব সভ্যতাগুলো যেরকম এক জায়গায় মিলে নিজের সন্তুষ্টি
চাওয়া। এর মোকাবেলায় সব দ্বীনগুলো মিলে যায় আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়া। আর
এইদুটো পরস্পর বিরোধী। মানুষের মনের ইচ্ছার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো কি? এক তো
মানুষেন মন বিলাসিতা চায়, আরেকটা হলো তার নফছ অহংকারি চায়। আর বিলাসিতা
অহংকার দ্বারা মানুষ এটাই চায় কেউ যেন আমার সমক্ষক না হয় সবাই যেন আমার
নিচে থাকে। মানুষের নফছ এগুলোই চায়। সেজন্য মানুষ দুনিয়ার লাইনে যতবেশী
উন্নতি করতে থাকে ততবেশী সে বিলাসিতার পথেও উন্নতি করতে থাকে। বিলাসিতার
এটাও একটা মাপকাঠি যে সে কত বেশী নিজেকে আলাদা করে দেখতে পায়। বিলাসিতার
এটা একটা অংশ সে অন্য কারো কাছে বসবেনা সব কিছু থেকে নিজেকে আলাদা করবে।
অহংকার আর বিলাসিতার পথে যে চলবে তার অহংকার ততবেশী সবাকে তার থেকে দূরে
সরিয়ে দিবে। আর যতবেশী মানুষের কাছে দ্বীন থাকবে ততবেশী সে নিজেকে ছোট করে
দেখবে আর অন্যের কাছে সে বড় হয়ে যাবে। রসুল সাঃ এ জন্য দোয়া করেছেনঃ হে
আল্লাহ্ তোমার কাছে আমাদেরকে প্রিয় বানাও, নিজের দৃষ্টিতে ছোট বানাও আর
অপরের দৃষ্টিতে আমাকে বড় বানাও। আর এর মোকাবেলায় যে নিজের কাছেই নিজে বড় হয়
অন্যের কাছে সে ছোট হয়ে যায়। আল্লাহতায়ালা বড় মেহেরবানি করে আমাদেরকে
দ্বীন দিয়েছেন যেটা ঐ সভ্যতার পথের একেবারে বিপরীত জিনিষ যে অন্যকে বড় করে
দেখা আর নিজেকে ছোট করে দেখা। হযরত মাওঃ ইলিয়াছ রহঃ এর কাছে একজন মূল্যবান
এক জিনিষ হাদিয়া নিয়ে এসেছেন, মাওলানা ইলিয়াছ রহঃ ঐ হাদিয়া দিল্লির একজন
আলিমের কাছে নিয়ে গেলেন আর তাকে হাদিয়া দিলেন আর এই কথা বলে দিলেন আমাকে
এই হাদিয়া একজন আলিম ভেবে দিয়েছেন আসলে এটা আপনারই প্রাপ্য, আপনি আলিম।
ইলিয়াছ রহঃ ভেবেছেন হাদিয়া আমাকে আলিম ভেবে ভূল করে দিয়েছেন আমি এটা সঠিক
জায়গায় পৌছিয়ে দিলাম। আল্লাহওয়ালারা নিজেদেরকে ছোট করে চলতো আর এটা দোয়া করে, কান্নাকাটি করে করে শিখেছে। এটা শিখার জিনিষ।
মুসফিক স্যার রহঃ এর বয়ান হতে কিছু অংশঃ-বঙ্গবন্ধু হল, রাজশাহী ভার্সিটি, (২০-১১-২০১১)